ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতার জেরে ছাত্রলীগের হাতে নৃশংসভাবে খুন বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।
শনিবার সন্ধ্যায় তিনি নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে এ স্ট্যাটাস দেন।
ওই স্ট্যাটাসে আবরার হত্যার মূলহোতা রুমমেট মিজানুর রহমানকেনিয়ে কথা বলেন।
ফাইয়াজ বলেন, মিজানকে হলের অনেকেই অনেক খারাপ জানলেও ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে পারে মিজান নাকি অনেক ভালো। বাকি রুমমেটদের মতবাদ অনুযায়ী রুমে মিজানের সবচেয়ে বেশি সখ্য ছিল ভাইয়ার সঙ্গে। কোথাও বাইরে খেতে গেলে নাকি ভাইয়াকে ছাড়া যেতই না।
হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রার সঙ্গেও আবরার ভালো সম্পর্ক ছিলবলে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন ফাইয়াজ।
প্রসঙ্গত আবরার ফাহাদ হত্যার মূলহোতা হিসেবে শেরে বাংলা হলে আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমানকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
তদন্ত প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ‘আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে মিজান মূলহোতা এবং সূচনাকারী হিসেবে চিহ্নিত।’
আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমানই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিনকে বলেছিলেন, ‘আবরার ফাহাদকে তার শিবির বলে সন্দেহ হয়।’
মিজানুরের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিন এই বিষয়টি শেরেবাংলা হল ছাত্রলীগের নিজস্ব ফেসবুক মেসেঞ্জারে জানান।
৪ অক্টোবর শেরেবাংলা হলের ক্যানটিনে মেহেদি হাসান ওরফে রবিন এবং ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে মুন্নার নেতৃত্বে অমিত সাহা, ইফতি মোশাররফ সকাল, আকাশ হোসেন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মনির, মিফতাহুল ইসলাম জীয়নসহ অন্য আসামিরা মিটিং করেন।
৫ অক্টোবর শেরে বাংলা হলের গেস্টরুমে (অতিথিকক্ষে) অভিযুক্ত আসামিদের কয়েকজন সভা করেন। সেই সভায় তারা সিদ্ধান্ত নেন আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করার। পরদিন দিনগত রাতে আবরারকে হত্যা করা হয়।
প্রসঙ্গত গত ৫ অক্টোবর দিল্লিতে হায়দ্রারাবাদ হাউসে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এসব চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ।
পরদিন রাতে বুয়েট শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।